‘যুদ্ধ হলে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় ব্যাপক প্রভাব পড়বে’

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট : যুদ্ধ হলে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।

 

তিনি বলেন, যুদ্ধ হলে শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এর প্রভাব পড়বে। সাপ্লাই চেইন, এয়ার রুট, সি রুট বিঘ্নিত হবে এবং বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যদিও কিছু দেশ মধ্যস্থতা করতে আগ্রহ দেখিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক চাপ যুদ্ধ প্রতিরোধে কাজ করবে, ছোটখাটো সংঘর্ষ এড়ানো যাবে না।

 

তিনি আরও বলেন, যুদ্ধে কেউই পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। আর অস্ত্র বিক্রেতা দেশগুলোর লাভ হয়। ভারত ইতোমধ্যে ফ্রান্সের সাথে চুক্তি করেছে। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুদ্ধ ঘিরে যে হাইপ তৈরি হয়েছে, তা দুই দেশের জনগণ কিভাবে নেয় তা গুরুত্বপূর্ণ।

 

তার মতে, সামরিক শক্তির তুলনামূলক বিশ্লেষণ সংবাদমাধ্যমে নিয়মিত হলেও বড় আকারে সেনা মোতায়েন না হওয়ায় বড় যুদ্ধের আশঙ্কা নেই। তবে সাময়িক উত্তেজনা চলবে।

 

ড. ইমতিয়াজ বলেন, পানি চুক্তি স্থগিত, আকাশসীমা বন্ধ, ভিসা বাতিলসহ নানা পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। নিরাপত্তা রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার কারণে নাগরিকদের ভোগান্তি বাড়বে এবং শেষ পর্যন্ত সমাধান দুই দেশের জনগণের ওপরই নির্ভর করবে।

 

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এই বিশ্লেষক বলেন, বাংলাদেশ এখনো পররাষ্ট্রনীতিতে নিজস্ব পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষ অবস্থান গড়ে তুলতে পারেনি। বাংলাদেশকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি অনুপস্থিত থাকায় ভারত ও পাকিস্তান কেউই বাংলাদেশের ওপর আস্থা রাখে না। ফলে বাংলাদেশ সমঝোতায় বড় ভূমিকা রাখার অবস্থানে নেই। বরং কাতার, সৌদি আরব বা তুরস্কের মতো দেশগুলোই মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে।

 

তিনি আরও বলেন, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে প্রতিদিন গোলাগুলি চলছে। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে বড় ধরনের যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় মানসিক ও জনসমর্থনের প্রস্তুতি নেই। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুর্বলতা ও অভ্যন্তরীণ উগ্রবাদের চাপ এবং ভারতের জনগণের যুদ্ধ অনিচ্ছা বড় যুদ্ধের সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়। যদিও সীমিত পর্যায়ে সার্জিক্যাল অ্যাটাক হতে পারে। বড় যুদ্ধের সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছে না।

 

এই বিশ্লেষক বলেন, যখনই হামলা হয়, ভারত ও পাকিস্তান একে অপরকে দোষারোপ করে। ফলে ব্লেম গেম সৃষ্টি হয় এবং মূল হামলাকারীরা পার পেয়ে যায়। দুই দেশের মধ্যে সমস্যার সমাধান রাজনীতিকরণের কারণে আটকে আছে এবং সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ ব্যাহত হয়।

 

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ২৬ জন নিহত হন। এ হামলার জেরে দেশ দুটির মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।সূত্র : ডয়চে ভেলে

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ধমক দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত করতে চাইলে বিএনপি সহ্য করবে না : ফারুক

» পিআর ইস্যুতে যা বললেন মঈন খান

» ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণার পরিসর বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

» আসিফের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» দেশের স্বার্থে বন্দর ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

» বিশেষ অভিযানে মোট ১ হাজার ৩৫৩ জন গ্রেফতার

» হজ শেষে ফিরেছেন ৬০ হাজার ৫১৩ হাজি

» জামালপুরে নারী এগিয়ে চলা প্রকল্পের সভা অনুষ্ঠিত

» জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে  মোরেলগঞ্জে বিএনপির বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি

» ইসলামপুরে রহিম মেম্বার হত্যা সন্দেহে দুইজন আটক

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

‘যুদ্ধ হলে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় ব্যাপক প্রভাব পড়বে’

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট : যুদ্ধ হলে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।

 

তিনি বলেন, যুদ্ধ হলে শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এর প্রভাব পড়বে। সাপ্লাই চেইন, এয়ার রুট, সি রুট বিঘ্নিত হবে এবং বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যদিও কিছু দেশ মধ্যস্থতা করতে আগ্রহ দেখিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক চাপ যুদ্ধ প্রতিরোধে কাজ করবে, ছোটখাটো সংঘর্ষ এড়ানো যাবে না।

 

তিনি আরও বলেন, যুদ্ধে কেউই পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। আর অস্ত্র বিক্রেতা দেশগুলোর লাভ হয়। ভারত ইতোমধ্যে ফ্রান্সের সাথে চুক্তি করেছে। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুদ্ধ ঘিরে যে হাইপ তৈরি হয়েছে, তা দুই দেশের জনগণ কিভাবে নেয় তা গুরুত্বপূর্ণ।

 

তার মতে, সামরিক শক্তির তুলনামূলক বিশ্লেষণ সংবাদমাধ্যমে নিয়মিত হলেও বড় আকারে সেনা মোতায়েন না হওয়ায় বড় যুদ্ধের আশঙ্কা নেই। তবে সাময়িক উত্তেজনা চলবে।

 

ড. ইমতিয়াজ বলেন, পানি চুক্তি স্থগিত, আকাশসীমা বন্ধ, ভিসা বাতিলসহ নানা পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। নিরাপত্তা রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার কারণে নাগরিকদের ভোগান্তি বাড়বে এবং শেষ পর্যন্ত সমাধান দুই দেশের জনগণের ওপরই নির্ভর করবে।

 

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এই বিশ্লেষক বলেন, বাংলাদেশ এখনো পররাষ্ট্রনীতিতে নিজস্ব পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষ অবস্থান গড়ে তুলতে পারেনি। বাংলাদেশকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি অনুপস্থিত থাকায় ভারত ও পাকিস্তান কেউই বাংলাদেশের ওপর আস্থা রাখে না। ফলে বাংলাদেশ সমঝোতায় বড় ভূমিকা রাখার অবস্থানে নেই। বরং কাতার, সৌদি আরব বা তুরস্কের মতো দেশগুলোই মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে।

 

তিনি আরও বলেন, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে প্রতিদিন গোলাগুলি চলছে। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে বড় ধরনের যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় মানসিক ও জনসমর্থনের প্রস্তুতি নেই। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুর্বলতা ও অভ্যন্তরীণ উগ্রবাদের চাপ এবং ভারতের জনগণের যুদ্ধ অনিচ্ছা বড় যুদ্ধের সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়। যদিও সীমিত পর্যায়ে সার্জিক্যাল অ্যাটাক হতে পারে। বড় যুদ্ধের সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছে না।

 

এই বিশ্লেষক বলেন, যখনই হামলা হয়, ভারত ও পাকিস্তান একে অপরকে দোষারোপ করে। ফলে ব্লেম গেম সৃষ্টি হয় এবং মূল হামলাকারীরা পার পেয়ে যায়। দুই দেশের মধ্যে সমস্যার সমাধান রাজনীতিকরণের কারণে আটকে আছে এবং সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ ব্যাহত হয়।

 

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ২৬ জন নিহত হন। এ হামলার জেরে দেশ দুটির মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।সূত্র : ডয়চে ভেলে

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com